ঢাকা , শুক্রবার, ২০২৪ মে ১৭, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
#

ক্যাম্পাস

স্বাধীনতার আলোচনা সভা বয়কট করে সমালোচিত চবি শিক্ষক সমিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক | টুয়েন্টিফোর টিভি
প্রকাশিত : সোমবার, ২০২৩ মার্চ ২৭, ১২:১২ পূর্বাহ্ন
#

মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন অনুষ্ঠানসূচীর আয়োজন করে। যেখানে ছিল স্বাধীনতা স্মৃতি ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ,  আলোচনা সভা ও ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান।

গতবছর এই সম্মাননা অনুষ্ঠান চালু করেন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার। যা সর্বমহলে বেশ প্রশংসিত ও সমাদৃত হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় রোববার (২৬ মার্চ) চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে চট্টগ্রামের ৫০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননার আয়োজন করা হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সকল পর্ষদ উপস্থিত থাকলেও উপস্থিত ছিলেন না কেবল শিক্ষক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সাতজন সদস্য। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহলে বইছে নিন্দার ঝড়। প্রগতিশীলতার মোড়কে নির্বাচিত হওয়া এসব শিক্ষকদের নিয়ে অনেকে অনুষ্ঠানস্থলেই  ক্ষোভ ঝেড়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে চবি শিক্ষক সমিতি স্বাধীনতা স্মৃতি ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করলেও আলোচনা সভা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠান বয়কট করেন। তাছাড়া যেকোনো জাতীয় অনুষ্ঠানে নিয়ম অনুযায়ী উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও ডীনদের পরেই শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সেখানে শিক্ষক সমিতি নিয়মের বাইরে গিয়ে সবার শেষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। যেটি নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়ে শিক্ষক সমিতি। 

শিক্ষক সমিতির নেতৃত্ববৃন্দরা কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন অনুষ্ঠানে সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. মোহাম্মদ নূরুল আজিম সিকদারকে স্বাগত বক্তা হিসেবে রাখা এবং আইকিউএসির পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুল্লাহ মামুন অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করা।

জানতে চাইলে চবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, আমরা স্বাধীনতার চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী। আমরা আলোচনা সভা বয়কট করেছি কিন্তুু স্বাধীনতা দিবস বয়কট করিনি। আমরা যারা আওয়ামী ও প্রগতিশীল শিক্ষক আছি তাঁরা বঙ্গবন্ধু চত্বর ও স্বাধীনতা স্মৃতি ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছি। স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের একজনকে বানানো হয়েছে প্রক্টর। আবার তাকেই স্বাগত বক্তা হিসেবে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনায় সুযোগ দেয়া হয়েছে। যেটা আমাদের মতো স্বাধীনতা স্বপক্ষে বিশ্বাসী  প্রগতিশীল শিক্ষকদের মেনে নেয়া সম্ভব হইনি। সেজন্যই আমরা আজকের আলোচনা সভায় যোগ দিইনি। আমাদের সাথে বেশ কয়েকজন ডীন একমত হওয়ায় ওনারাও আজকের আলোচনা সভা বয়কট করেছে। 

তবে চবি শিক্ষক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সজীব কুমার ঘোষ বলেন, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান কোনো ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান ছিলো না। এটা জাতীয় অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠান বয়কট করা মানে স্বাধীনতাকে অস্বীকার করা। আমি বলবো শিক্ষক সমিতির গুটি কয়েক শিক্ষকের কারনে আজ চবি শিক্ষক সমিতির সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে। ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ থাকতেই পারে তাই বলে একটা জাতীয় অনুষ্ঠান বর্জন করা এটা মোটেও প্রগতিশীলতার পরিচয় বহন করেনা। 
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তা হিসেবে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. নূরুল আজিম শিকদার। এছাড়াও অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেছেন ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এস্যুরেন্স সেলের (আইকিউএসি) পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন।

বিষয়টি নিয়ে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতার বলেন, এটা একটি জাতীয় অনুষ্ঠান। এখানে স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সবাই এইদিনটাকে উদযাপন করে থাকে। পদাধিকার বলেই প্রক্টর স্বাগত বক্তব্য রেখেছেন। তাছাড়া শিক্ষক সমিতির নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন সহযোগিতা না করে বারবার আমার কাজের সমালোচনা করে আসছেন। তাঁরা সমালোচনায় মত্ত থাকুক আমি আমার কাজ করে যাবো।
তিনি আরো বলেন, আজকে দেশের সূর্য সন্তানদের যে সম্মান দেখিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় তাতে মুক্তিযোদ্ধারাও আপ্লুত। আজকের দিনে নতুন প্রজম্মরা সম্মাননা পাওয়া এইসকল মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব ইতিহাস শুনতে পেয়েছে। দেশের স্বাধীনতায় তাঁদের ত্যাগ তিতিক্ষা কত গভীর ছিল নতুন প্রজম্ম সেটা বুঝতে পেরেছে। এর চেয়ে বড় পাওনা আমার জন্য  আর হতে পারেনা।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video