ঢাকা , বুধবার, ২০২৫ মে ০৭, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২
#

দেশজুড়ে

টুঙ্গিপাড়ায় তিন ইউপি চেয়ারম্যানের আত্মগোপন, ভোগান্তিতে হাজারো জনগণ

শওকত হোসেন মুকুল, গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : শনিবার, ২০২৫ এপ্রিল ২৬, ০৬:৫৩ অপরাহ্ন
#

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় কয়েক মাস ধরে অজ্ঞাত স্থানে বসে পরিষদ চালাচ্ছেন নৌকা প্রতীকের তিন ইউপি চেয়ারম্যান। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ডুমুরিয়া, গোপালপুর ও বর্নি ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ। নাগরিক সেবা যেমন জন্মনিবন্ধন, মৃত্যু সনদ, নাগরিকত্ব সনদ, ট্রেড লাইসেন্সসহ অন্যান্য সনদ ও প্রত্যয়নপত্র যথাসময়ে পাচ্ছেন না তারা।

অজ্ঞাত স্থানে থেকে পরিষদ চালাচ্ছেন ডুমুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলী আহম্মেদ শেখ, গোপালপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লাল বাহাদুর বিশ্বাস এবং বর্নি ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিলিয়া আমিনুল।

জানা গেছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার পাঁচ ইউপি চেয়ারম্যান আত্মগোপনে চলে যান। তখন স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে ২০২৪ সালের ৯ আগস্ট একটি পরিপত্র জারি করে প্যানেল চেয়ারম্যানদের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর কুশলী ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেলে প্যানেল চেয়ারম্যান দায়িত্ব নেন। কিন্তু চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি টুঙ্গিপাড়ায় পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি হওয়ায় বাকি তিন চেয়ারম্যান অজ্ঞাত স্থানে বসে পরিষদ চালাচ্ছেন। তারা জনগণের ফোন রিসিভ করছেন না বা সচিবদের মাধ্যমে আবেদনের কাগজ জমা দিতে বলছেন।

বর্নি ইউনিয়নের বাসিন্দা ফরহাদ হোসেন মুন্সী ও হাফেজ মোহাম্মদ মোস্তাইনসহ অনেকে অভিযোগ করেন, মাসের পর মাস জন্মনিবন্ধনসহ নানা সেবার জন্য ঘুরেও চেয়ারম্যানের দেখা পাচ্ছেন না। মোবাইলও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

বর্নি ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তপন কুমার বিশ্বাস জানান, চেয়ারম্যান পরিষদে আসেন না। সচিবের কাছে রাখা আবেদনপত্র তার স্বামী নিয়ে যান এবং পরে সই করা কাগজপত্র ফেরত পাঠানো হয়।

ডুমুরিয়া ও গোপালপুরের বাসিন্দারাও একই অভিযোগ করেন। পরিষদে দিনভর ঘুরেও ওয়ারিশান, নাগরিক ও চারিত্রিক সনদ পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। এতে সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে।

এ বিষয়ে গোপালপুর ও ডুমুরিয়া ইউপিতে গিয়ে দুই চেয়ারম্যানের কাউকেই পাওয়া যায়নি। ফোন ও বার্তা পাঠিয়েও তাদের সাড়া মেলেনি। তবে বর্নি ইউপি চেয়ারম্যান মিলিয়া আমিনুল হোয়াটসঅ্যাপে জানান, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের মিথ্যা মামলায় তার নাম থাকায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে পরিষদে যান না। তবে স্বামী ও সচিবের মাধ্যমে সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন বলে দাবি করেন।

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ মঈনুল হক বলেন, কোন জনপ্রতিনিধি অনুমোদনহীনভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকলে স্থানীয় সরকার আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video