ঢাকা , শনিবার, ২০২৫ মে ১০, ২৭ বৈশাখ ১৪৩২
#

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করে পালালেন শংকর কান্তি দে

আ.ন.ম সেলিম উদ্দিন, পটিয়া প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম।
প্রকাশিত : শনিবার, ২০২৫ মে ১০, ০৫:৩১ অপরাহ্ন
#

চট্টগ্রামের পটিয়ায় গ্রাহকের ৪০ লাখ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছেন মাতৃভাণ্ডার মাতৃকল্যাণ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি. (রেজি. নং-১০৫১৮)-এর ম্যানেজার শংকর কান্তি দে (৪৭)। তিনি পটিয়া পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সুচক্রদণ্ডী গ্রামের মাষ্টার বেকারির মালিক হরিপদ দে বাড়ির মৃত বাদল দে’র ছেলে।

জানা যায়, সমবায় অধিদপ্তর থেকে ২০১০ সালে সমবায় সমিতি হিসেবে রেজিস্ট্রেশন নিয়ে নিয়ম-কানুন তোয়াক্কা না করে সঞ্চয় আমানত ও স্থায়ী আমানত গ্রহণ এবং ঋণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে ‘মাতৃকল্যাণ মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লি.’ নামের এই সমিতি। সমবায় অধিদপ্তরের তদারকির অভাবে দীর্ঘদিন ধরে এসব অনিয়ম চালিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ করেছে সচেতন মহল।

শংকর কান্তি দে সমিতির একজন পরিচালক এবং মাসিক ১০ হাজার টাকা বেতনে ম্যানেজার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করতেন। তিনি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও সমিতির প্যাডে নিজে স্বাক্ষর করে গ্রাহকদের কাছ থেকে স্থায়ী আমানত ও সঞ্চয় আমানতের নামে বড় অঙ্কের টাকা সংগ্রহ করেন। সরল বিশ্বাসের গরিব অসহায় মানুষদের কাছ থেকে তিনি প্রায় ৪০ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন। গত প্রায় তিন মাস ধরে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তার পরিচালিত অফিসে তালা ঝুলছে। প্রতারণার শিকার হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন গ্রাহকরা।

জানা যায়, দক্ষিণ ভূর্ষি গ্রামের আবদুল রাজ্জাকের স্ত্রী চেমন আরা বেগমের সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা, একই এলাকার ওসমান গণির স্ত্রী রীনা আক্তার চৌধুরীর এক লাখ টাকা, মৃত আবদুর সত্তারের ছেলে নুরুল কবিরের দেড় লাখ, দোহাজারী পৌরসভা এলাকার মোহাম্মদ ওসমানের স্ত্রী রিনা আক্তারের এক লাখ টাকা, সুচক্রদণ্ডী গ্রামের মৃত কুমত চক্রবর্তীর ছেলে প্রাণতোষ চক্রবর্তীর এক লাখ, তারেক হোসেনের স্ত্রী শিল্পী আক্তারের ৩০ হাজার টাকা, প্রবীর সেন গুপ্তের ছেলে বিজয় সেন গুপ্তের দুই লাখ, তপন শীলের দেড় লাখ, বাবলু দে’র এক লাখ এবং মধু বাবুর দুই লাখ টাকা সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক গ্রাহকের আমানতের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি।

এছাড়া তালতলা চৌকি ব্যবসায়ী সমিতি থেকেও চার লাখ টাকা নিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। বর্তমানে সমিতির কার্যালয় বন্ধ রয়েছে এবং টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

ভুক্তভোগী চেমন আরা বেগম জানান, “আমার পরিবারের সারাজীবনের কষ্টের টাকা বেশি লভ্যাংশের লোভ দেখিয়ে হাতিয়ে নেয় শংকর দে।”

সমিতির পরিচালক অসিম বসু মল্লিক জানান, “শংকর দে মাষ্টার বেকারির মালিক হরিপদ দে’র ভাতিজা। তার মধ্যস্থতায় একবার পাঁচ লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। যদি সে আন্তরিকভাবে সহযোগিতা করতো, তাহলে সমাধান সহজ হতো। কিন্তু হঠাৎ করে সে পরিবারসহ পালিয়ে যাওয়ায় আমরা কেউ তার খোঁজ পাচ্ছি না।”

শংকর দে’র মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে এবং তার বাড়িঘর তালাবদ্ধ রয়েছে বলে জানা গেছে।

উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. শফিউল আজম বলেন, “সমিতির বিষয়ে কেউ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

আরও খবর

Video