রোহিঙ্গা সংকটে অঞ্চলজুড়ে নিরাপত্তা হুমকিতে: ড. ইউনূস

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত : বুধবার, ২০২৫ এপ্রিল ২৩, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন

মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে চাপ দিতে কাতারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান না হলে পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নষ্ট হবে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) দোহায় কাতার ফাউন্ডেশন আয়োজিত রোহিঙ্গা সংকট ও বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীর বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্যকালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “রোহিঙ্গা সংকট কেবল একটি মানবিক সমস্যা নয়; এটি একটি বহুমাত্রিক সংকট, যার সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও পরিবেশগত প্রভাব রয়েছে। এই সংকটের একমাত্র সমাধান হলো টেকসই প্রত্যাবাসন।”

তিনি জানান, বাংলাদেশ প্রায় ১৩ লাখ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে। প্রতি বছর প্রায় ৩২ হাজার নবজাতক যুক্ত হচ্ছে। নানা সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও কেবল মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশ এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “রাখাইনের পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। আরাকান আর্মি (এএ) বর্তমানে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের ২৭১ কিমি ও রাখাইনের ১৭টির মধ্যে ১৪টি টাউনশিপ নিয়ন্ত্রণ করছে। ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারির তথ্য অনুযায়ী, রাখাইনে মোট অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭৬ জন। এর মধ্যে ১ লাখ ৫২ হাজার ৭১ জন রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গা দীর্ঘমেয়াদে ২১টি ক্যাম্প ও তিনটি গ্রামে বসবাস করছে। নতুন করে বাস্তুচ্যুত ৩ লাখ ৮৬ হাজার ৮০৫ জন (অধিকাংশ রাখাইন) ১ হাজার ২১৯টি স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে নতুন করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে ১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে আরাকান আর্মির হামলার মুখে ৯০৯ জন মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর মধ্যে ৮৭৫ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে এবং ৩৪ জনকে শিগগির পাঠানো হবে।”

রোহিঙ্গা সংকটে অর্থায়নের সংকট তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “দুঃখজনকভাবে, রোহিঙ্গা মানবিক সংকট মোকাবিলায় যৌথ সহায়তা পরিকল্পনার (জেআরপি) অর্থায়ন ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। ২০২৪ সালে ৮৫২.৪ মিলিয়ন ডলার আহ্বান করা হলেও প্রাপ্ত অর্থ ৬৪.৪ শতাংশ অর্থাৎ ৫৪৮.৯ মিলিয়ন ডলার।”

তিনি জানান, ২০২৫-২৬ সালের জেআরপি ২০২৫ সালের ২৪ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে। এর আওতায় ১৪.৮ মিলিয়ন মানুষ—রোহিঙ্গা ও কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠী—কে সহায়তা দিতে প্রয়োজন ৯৩৪.৫ মিলিয়ন ডলার। ইউএসএ-এর বিদেশি সাহায্য হ্রাস করায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, “সম্প্রতি বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি) ঘোষণা দিয়েছিল যে, তারা ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে খাদ্য সহায়তা বন্ধ করতে পারে। তবে তাৎক্ষণিক অর্থায়ন জোগাড় করে সেটি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা গেছে। কিন্তু সেপ্টেম্বর ২০২৫ থেকে আবার তহবিল সংকটে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করছে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে। আশা করি, কাতার এই দিক থেকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।”


সম্পাদক ও প্রকাশক : মো: শামসুল কবির শাহীন
ব্যবস্থাপনা পরিচালক: মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির
নির্বাহী সম্পাদক:এম.এ কাইয়ুম

■ অফিস  :
প্রধান কার্যালয় : ২৪, গার্ডেন ভিউ, বায়েজিদ-ফৌজদারহাট লুফ রোড (লিংক রোড), ৬নং ব্রীজ, বায়েজিদ, চট্টগ্রাম।
সম্পাদকীয় কার্যালয় : এম.এম টাওয়ার (৮ম তলা, লিফট-৭), সানমারের উত্তর পাশে, জিইসি মোড়, চট্টগ্রাম

মোবাইল : +880 1844 29 28 58
ই-মেইল : newsoffice.24tv@gmail.com

কপিরাইট © 2018-2023 24tv.com.bd । একটি টুয়েন্টিফোর ফ্যামেলির প্রতিষ্ঠান
Design & Developed by Smart Framework